বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা বাগেরহাট।বাগেরহাট মংলা বন্দর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে সুন্দরবনের একটি দৃষ্টিনন্দন অভয়ারণ্য হিরণ পয়েন্ট। সুন্দরবনের মাঝে আরেকটি সুন্দরবন হিরণ পয়েন্ট। এই হিরন পয়েন্ট টি নীল কমল নামে পরিচিত।
সুন্দরবনের মাঝখানে প্রবাহিত কুঙ্গা নদীর পশ্চিমে এই অভয়ারণ্যটি অবস্থিত। নানা রকম পশু পাখিতে সমৃদ্ধ এই অভয়ারণ্যটি বাগেরহাটের অন্যান্য পর্যটন স্থাপনা গুলোর মধ্যে বেশ গুরুত্ব বহন করে। প্রতিদিন শত শত পর্যটক আসে এখানে প্রকৃতির সাক্ষী হতে। নৌকা বা লঞ্চ থেকে নেমে হিরণ পয়েন্টের প্রধান ফটকে চোখে পড়ে ‘হিরণ পয়েন্ট পাইলট বেইজ মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ’ লেখাটি।এটি নৌবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন।
বাংলাদেশে যতগুলো ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য রয়েছে তার মধ্যে হিরণ পয়েন্ট একটি। কাঠ দিয়ে তৈরি হিরণ পয়েন্টে ঘোরার জন্য দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ট্রেইল রয়েছে এই ট্রেইল ধরে পুরো জায়গাটি ঘুরতে ঘুরতে চোখে পড়বে নানা প্রকারের পশুপাখি যার মধ্যে রয়েছে বানর, চিত্রা হরিণ, কয়েকশো প্রজাতির প্রজাপতি, কেওড়া গাছের সারি, কালোমাথা মাছরাঙ্গা, সাদা ও হলুদ বুক মাছরাঙ্গা।
মাঝে মাঝে রয়েল বেঙ্গল এর পায়ের ছাপ চোখে পড়ে। হিরণ পয়েন্ট থেকে তিন কিলোমিটার দূরে প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার আছে। সেখান থেকে হিরণ পয়েন্ট সহ সুন্দরবনের আশেপাশের প্রকৃতি লক্ষ করা যায়। ভাগ্য ভালো থাকলে রয়েল বেঙ্গল টাইগার চোখে পড়ে।উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো ১৯৯৫ সালে গত শতকের শেষ সূর্যগ্রহণ দেখা গিয়েছিল এখান থেকে যা ২ মিনিট ১০ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল।
হিরণ পয়েন্টের মাঝেমাঝে বসার জন্য টিনের শেড দিয়ে বেঞ্চ করা আছে। হাঁটতে-হাঁটতে ক্লান্তি চলে আসলে একটু জিরিয়ে নিতে পারে পর্যটকরা। পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে দেখে যেতে পারেন সুন্দরবনের মাঝে আরেকটি মিনি সুন্দরবন এই হিরন পয়েন্ট। পূর্ব থেকে বন বিভাগের অনুমতি সাপেক্ষে গান মেনে নিতে পারেন হিরণ পয়েন্ট প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। হিরণ পয়েন্টে যাওয়ার আগে অবশ্যই শুকনো খাবার সঙ্গে নিবেন ও পানি সঙ্গে নিবেন।
প্রতিবছর নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শীতকালীন সময়ে হিরণ পয়েন্টে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের প্যাকেজ দিয়ে থাকে।তিন দিন দুই রাতের এই ভ্রমণ প্যাকেজ জনপ্রতি খরচ হয় ৬৫০০ থেকে ১২০০০ টাকা পর্যন্ত। খুলনার বি আই ডব্লিউটি লঞ্চঘাট থেকে বেশ কয়েকটি টুরিস্ট কোম্পানি এই প্যাকেজ দিয়ে থাকে।
এসব প্যাকেজের মধ্যে থাকে হিরণ পয়েন্ট, জামতলা, টাইগার পয়েন্ট, করমজল ইত্যাদি। ভ্রমনের পুরো প্যাকেজের মধ্যে গাইড, খাবার, সুন্দরবনের প্রবেশ মূল্য, গান ম্যান ভ্রমণ প্রতিষ্ঠান বহন করে। খুলনা থেকে হিরণ পয়েন্ট প্রায় ৬০ কিলোমিটার পথ।আর সময় লাগে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টার মত।
অবস্থান
এটি বাগেরহাট জেলার মংলা বন্দর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা কল্যাণপুর গাবতলী মহাখালী থেকে বাগেরহাট যাওয়ার বাস প্রতিদিনই পাওয়া যায়।
বাস
গোল্ডেন লাইন পরিবহন (কল্যাণপুর মোবাইল-01705408500, বাগেরহাট মোবাইল-01733399827)
হানিফ এন্টারপ্রাইজ কল্যাণপুর মোবাইল-01713049541
নন এসি 500 টাকা এসি 1000 টাকা ভাড়া।
অনলাইনে টিকিট বুকিং এর জন্য সহজ-16374
বাস বিডি-16460
ট্রেন
ঢাকা থেকে বাগেরহাট সরাসরি কোন ট্রেন নেই তবে ঢাকা থেকে খুলনা যেয়ে সেখান থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বাস বা সিএনজি যোগে বাগেরহাট শহরে যেতে পারেন।
ঢাকা কমলাপুর থেকে খুলনা
সুন্দরবনে প্রভাতী ছাঁড়ে 6:20 Am পৌঁছায় 4:20 pm
বন্ধ বুধবার
চিত্রা ছাঁড়ে 7:00 pm পৌঁছায় 05:10 Am
বন্ধু সোমবার
সকল ট্রেনের ভাড়া 525 টাকা
খুলনা থেকে ঢাকা কমলাপুর
চিত্রা ছাঁড়ে 8:40 Am পৌঁছায় 06:20 pm
সুন্দরবন এক্সপ্রেস ছাঁড়ে 8:30 pm পৌঁছায় 5:40 Am
[ বাগেরহাট শহর থেকে মংলা বন্দর সরাসরি বাস সার্ভিস রয়েছে। বাগেরহাট থেকে মংলা বন্দর ৫৫ কিলোমিটার পথ। বাস বা নিজস্ব পরিবহনে ৭০ থেকে ৮০ মিনিটে মংলা বন্দর পৌঁছাতে পারেন। বাস ভাড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকার মত পড়বে]
[ মংলা বন্দর টি পশুর নদীর পাশে অবস্থিত আর এই পশুর নদী থেকেই প্রতিদিন সকাল ৯ টার পর থেকে নৌকা পাওয়া যায় হিরণ পয়েন্টে যাওয়ার জন্য। আড়াইশো থেকে ৩০০ টাকা পড়ে যাওয়া আসা সহ। তবে নৌকার মাঝির সাথে কথা বলে নেওয়া ভালো।একসাথে ৮-১০ জন গ্রুপ করে গেলে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। মংলা বন্দর থেকে হিরণ পয়েন্ট ১২ কিলোমিটার পথ দুই থেকে আড়াই ঘন্টার মত সময় লাগে]