মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজের প্রতি ভালোবাসার অপরূপ নিদর্শন হিসেবে নির্মাণ করেছিলেন তাজমহল। আর বাগেরহাট জেলা সদরের রনজিতপুরে স্ত্রী চন্দ্রার প্রতি ভালোবাসা হিসেবে চন্দ্রমহল বানিয়েছেন ব্যবসায়ী সৈয়দ আমানুল হুদা সেলিম। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন। এই চন্দ্রমহল কে ঘিরে নির্মাণ করা হয়েছে ইকোপার্ক।
দূর থেকে ইকো পার্কের মূল ভবনটি কে দেখলে ঐতিহাসিক মসজিদ মনে হবে। বাড়িটির উপরে একটি বড় গম্বুজ রয়েছে। গম্বুজটির চারপাশে পিতলের নকশা বেশ আকর্ষণীয়, সূর্যের আলো পড়তেই গম্বুজের আলোকছটা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বাগেরহাট জেলার গার্মেন্টস ব্যবসায়ী সৈয়দ আমানুল হুদা সেলিম ২০০১ সালে ১০৫ বিঘা জমির উপর স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার সম্মান জানাতে এটি তৈরি করেন।
মূল ভবনে প্রবেশ করতে হয় পানির নিচ দিয়ে তৈরি সুরঙ্গ পথ দিয়ে। এখানে আছে নানা স্থাপত্যশৈলী। পূর্বপুরুষের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, ডাকটিকিট, বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও আকর্ষণীয় অনেককিছু। এখানে রয়েছে হরিণ, কুমির, বানর সহ বিভিন্ন প্রজাতির জীব জন্তু দিয়ে তৈরি একটি মিনি চিড়িয়াখানা। বিলুপ্ত হওয়া রূপসা-বাগেরহাট; দেশের প্রথম রেল লাইনের প্রতিকৃতি রয়েছে।
প্রায় ৫০০ নারকেল গাছ সহ পিকনিক স্পট, বেশকিছু পুকুর, পুকুরের ওপরে ময়ূরপঙ্খী নৌকা সবার দৃষ্টি কাড়ে। পুরো ইকোপার্কটি জুড়ে রয়েছে বাংলার কৃত্তিম প্রকৃতি। ২০০১ সালে নির্মাণ কাজ শুরু করে টানা ৯ বছর এর নির্মাণকাজ চলে আর ২০০৯ সালে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় এটি।
বর্তমানে এর তত্ত্বাবধায়ক মহব্বত আলী চাকলাদার বলেন উপজেলা কাটাখালি নামক স্থান থেকে এই ইকোপার্কের যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হলে আরো প্রচুর দর্শনার্থী এখানে আসবে। হাঁটতে-হাঁটতে ইকোপার্কের চারদিকে পরিখার পাশে মাদার তেরেসা, মহাত্মা গান্ধী, মাস্টারদা সূর্য সেন এর প্রতিকৃতি নজর কাড়ে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সী মানুষ এই ভালবাসার নিদর্শন এক পলক দেখতে আসেন।
অবস্থান
এটি বাগেরহাট জেলা সদর হতে ৩০ কিলোমিটার দূরে ফকিরহাট উপজেলার রণজিতপুর নামক গ্রামে অবস্থিত।
ইকো পার্কের প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা আর এটি সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত খোলা থাকে সপ্তাহে সাত দিন।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা কল্যাণপুর গাবতলী মহাখালী থেকে বাগেরহাট যাওয়ার বাস প্রতিদিনই পাওয়া যায়।
বাস
গোল্ডেন লাইন পরিবহন (কল্যাণপুর মোবাইল-01705408500, বাগেরহাট মোবাইল-01733399827)
হানিফ এন্টারপ্রাইজ কল্যাণপুর মোবাইল-01713049541
নন এসি 500 টাকা এসি 1000 টাকা ভাড়া।
অনলাইনে টিকিট বুকিং এর জন্য সহজ-16374
বাস বিডি-16460
ট্রেন
ঢাকা থেকে বাগেরহাট সরাসরি কোন ট্রেন নেই তবে ঢাকা থেকে খুলনা যেয়ে সেখান থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বাস বা সিএনজি যোগে বাগেরহাট শহরে যেতে পারেন।
ঢাকা কমলাপুর থেকে খুলনা
সুন্দরবনে প্রভাতী ছাঁড়ে 6:20 Am পৌঁছায় 4:20 pm
বন্ধ বুধবার
চিত্রা ছাঁড়ে 7:00 pm পৌঁছায় 05:10 Am
বন্ধু সোমবার
সকল ট্রেনের ভাড়া 525 টাকা
খুলনা থেকে ঢাকা কমলাপুর
চিত্রা ছাঁড়ে 8:40 Am পৌঁছায় 06:20 pm
সুন্দরবন এক্সপ্রেস ছাঁড়ে 8:30 pm পৌঁছায় 5:40 Am
বাগেরহাট জেলা শহর থেকে এই ইকোপার্কটি ৩০ কিলোমিটার দূরে। জেলা শহর থেকে বাস বা সিএনজি যোগে ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালি নামক স্থানে নেমে সেখান থেকে ইজিবাইক যোগে ১৫-২০ টাকা ভাড়া দিয়ে চন্দ্রমহল ইকো পার্ক যেতে পারেন। বাগেরহাট থেকে কাটাখালি বাস ভাড়া পড়বে ৩০-৩৫ টাকার মতো।
কোথায় থাকবেন
চন্দ্রমহল ইকো পার্কে থাকার মত তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই তবে চন্দ্রমহল ইকোপার্ক দেখে বাগেরহাটে যেয়ে থাকাটাই ভালো।এছাড়া ফকিরহাট উপজেলায় থাকতে চাইলে উপজেলা ডাকবাংলোতে থাকতে পারেন এজন্য আগে থেকে অনুমতি নিয়ে রাখতে হবে। ফকিরহাট উপজেলায় মৌ-বন হোটেল রয়েছে মোবাইল-০১৭১২৫২৩২৭০ সেখানেও থাকতে পারেন।
বাগেরহাট শহরে থাকার মতো বিভিন্ন মানের হোটেল ও সার্কিট হাউজ রয়েছে।
হোটেল আল আমিন মোবাইল-01966044718
হোটেল ফুয়াদ আবাসিক মোবাইল-01715857362
হোটেল মমতাজ মোবাইল-01777758744
হোটেল অভি মোবাইল-01833742623
[ হোটেলগুলো ভাড়া ৪০০ থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে পড়বে]