বাংলাদেশের সর্ব পশ্চিমের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। আমের রাজধানীখ্যাত এই চাপাইনবাবগঞ্জে নাচোলের একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম টিকোইল যা আলপনা গ্রাম নামে সবার কাছে পরিচিত। বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত এই নাচলে ৮৬ রাজবংশী পরিবারের এই গ্রামটি যেন রং তুলিতে আঁকা একটি ক্যানভাস।
এখানকার মানুষদের অসাধারণ শৈল্পিক কর্মের কারনে দেশব্যাপী এই গ্রামের পরিচিতি। শহরের কোলাহল যুক্ত জীবনে যাদের নাভিশ্বাস অবস্থা তাদের জন্য রংয়ের ঘনঘটায় আপনাকে রাঙিয়ে দেওয়ার জন্য আহ্বান করছে আলপনা নামের এই গ্রামটি। বিভিন্ন উৎসবে যেমন পূজা-পার্বণে এই গ্রাম যেন রংতুলিতে আঁকা ক্যানভাস আর প্রতিটি ঘর যেন সে ক্যানভাসের এক একটি চরিত্র।
বাড়ির বাহিরের দেয়ালের সাথে সাথে বাড়ির ভিতরের রান্নাঘর,গোয়াল ঘর, এমনকি ছোট বাচ্চাদের আকর্ষণীয় নানা জীবজন্তুুর ছবি, বাদ যায় না কোন কিছুই।দর্শনার্থীদের পরিদর্শন খাতার প্রতিটি পাতায় ঘুরতে আসা মানুষদের শুভেচ্ছা বার্তা মনে রাখার মত। দেখনবালার স্বামী দাসু বর্মনের দায়িত্বে রাখা আছে দর্শনার্থীদের পরিদর্শন খাতা।
কবে থেকে শুরু
গ্রামের প্রতিটি মানুষের জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে এই আলপনা। নৌকা, নদী, গাছ,পাখি,আকাশ,মানুষ, লতাপাতা তাদের আলপনার অংশ। প্রায় ৩৫ বছর আগে এখানে বউ হয়ে আসেন দেখনবালা বর্মন। পুরো গ্রামের সব দেয়াল মেঝে উঠোনে আঁকা আলপনা সেদিনই মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি এরপরে তিনি প্রচলিত আলপনার বাহিরে তিনি যোগ করেছিলেন ফুল পাখি আবহমান বাংলার দৃশ্য। আলপনা আঁকেন মূলত এই গ্রামের নারীরা। তবে এখন নারী-পুরুষদের পাশাপাশি ছোট শিশুরাও খেলার ছলে মেতে উঠে রং নিয়ে। গ্রামের প্রতিটি মানুষই যেন এক একজন চিত্রকর।
রং এর ব্যবহার
প্রথম থেকেই প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহার হয়ে আসছিল এখানে। লাল মাটি ভিজিয়ে কয়েকদিন রাখার পর লাল রং তৈরি করতেন এখানকার গ্রামবাসীরা। সাদা রং তৈরিতে ব্যবহার হতো চালের গুড়া। এছাড়া আমের আঁটির শাঁস চূর্ণ, গিরিমাটি রং তৈরির কাজে ব্যবহার করতেন। প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি করা রং বেশিদিন স্থায়ী হয় না বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে ধুয়ে-মুছে যায়। তাই বর্তমানে কৃত্রিম রং আলপনার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
অবস্থান
এটি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ২৪ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে উপজেলা নাচোলের সন্নিকটে এই টিকোইল গ্রাম অবস্থিত।
কিভাবে যাবেন
ট্রেন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছাড়ে 05:50 am ঢাকায় পৌঁছায় 11:40 am
বন্ধ -শুক্রবারপদ্মা এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে ছাড়ে11:10 pm চাঁপাইনবাবগঞ্জপৌঁছায় 05:50 am ভাড়া ৪০৫ টাকা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছাড়ে 02:30 pm ঢাকায় পৌঁছায় 9:38 pm
বন্ধ -মঙ্গলবার
এছাড়া শিবগঞ্জ থাকতে চাইলে উপজেলা ডাকবাংলোতে থাকতে পারবেন। এর জন্য আগে থেকে অনুমতি নিতে হবে।
চাপাইনবাবগঞ্জে থাকার মত কিছু হোটেল।
হোটেল আল নাহিদ ,মোবাইল- 01713376902
স্কাইভিউ ইন্টারন্যাশনাল ,মোবাইল-01739035876
হোটেল রংধনু, মোবাইল- 01712339687
[ হোটেল গুলোর ভাড়া ৩০০ থেকে থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে পড়বে]