নীহাররঞ্জন গুপ্তের বাড়ি

 লিখেছেনঃ
  ডিসে. 22, 2019
  493 Views
0 0
 বাংলার ইতিহাসে এক অলিখিত লীলাভূমি নড়াইল জেলা। এক পথে ঘাটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে হাজারো ইতিহাস। কয়েকশো বছর আগেও নড়াইল জেলা হয়ে উঠেছিল শিল্প-সাহিত্য চর্চারএক পীঠ স্থান। এর পিছনে অবশ্য সবচেয়ে বড় অবদান ছিল এ অঞ্চলের জমিদারদের। এ অঞ্চলে এক সময় জমিদাররা শাসন করতো। নড়াইল জমিদার পরিবারের নামানুসারেই নাম হয়েছে ‘নড়াইল’।
এই জেলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। যুগে যুগে এই নড়াইল জেলাতে জন্মগ্রহণ করেছেন নানা প্রতিভাবান ব্যক্তি আর তাদের দ্যুতি ছড়িয়েছেন দেশ-বিদেশে। তাদের মধ্যে আছেন বিশ্ব বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান, কমরেড অমল সেন, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ, নৃত্যশিল্পী উদয় শংকর,  আমাদের সবার প্রিয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও অমর ঔপন্যাসিক ডক্টর নীহাররঞ্জন গুপ্ত ।
পুরো জেলা জুড়ে রয়েছে নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন যার মধ্যে অন্যতম নীহাররঞ্জন গুপ্তের পৈতৃক বাড়ি যা বাংলাদেশের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।২০০৩ সালে বাসভবনটি কে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

১৯১১ সালের ৬ জুন কলকাতায়  তিনি জন্মগ্রহণ করেন। জন্ম কলকাতায় হলেও তাঁর বাড়ি ছিল নড়াইল জেলার ইতনা গ্রামে। বর্তমানে এই বাড়িতে ‘শিশুস্বর্গ ২’ গড়ে তোলা হয়েছে। এই শিশুস্বর্গ টি উদ্বোধন করেন চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান। নীহাররঞ্জন গুপ্ত ১৮৯৬ সালের ২০ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতাতে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি মূলত জনপ্রিয় রহস্য কাহিনীকার ছিলেন। বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র ‘কিরিটি’ রায়ের স্রষ্টা তিনি। প্রায় ২০০ এর বেশি গ্রন্থ তিনি রচনা করেছেন যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাসপাতাল, কালোভ্রমর, রাতের রজনীগন্ধা ইত্যাদি।

বাড়িটি দুই বিঘা জমির উপর নির্মিত। দুই তলা ভবনের সামনে একটি পুকুর ও নানা গাছগাছালি দিয়ে ঘেরা বাড়িটি। নিচতলা ও উপর তলা মিলে মোট দশটি ঘর হয়েছে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত বাড়িটির নকশা চোখে পড়ার মতো। আসবাবপত্র তেমন  নেই তবে ঘরের দেয়ালে খাঁজকাটা আলমারি রয়েছে। উপরে পশ্চিম দিকে তিনটি ঘর  আছে। নিচতলায় উত্তর দিকে সাতটি ঘর রয়েছে।

বাড়ির দক্ষিনে একটি মন্দির রয়েছে  সে সময় নীহাররঞ্জন গুপ্তের পরিবার এই মন্দিরে পুঁজা-অর্চনা  করত। নীহাররঞ্জন বাড়ি বলে এলাকায় এটি প্রচলিত। বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বাড়িটি সংরক্ষিত করলেও কোনো সংস্কার করেনি। এলাকাবাসীর দাবি  সরকার এর প্রতি সুদৃষ্টি দিলে  পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

অবস্থান

এটি বাংলাদেশের নড়াইল জেলা শহর হতে উপজেলা লোহাগড়া থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ইতনা নামক গ্রামে অবস্থিত।

নীহাররঞ্জন গুপ্ত বাড়ির সাথে যোগ করতে পারেন নিরিবিলি পিকনিক স্পটটিও । নিরিবিলি পিকনিক স্পটে রাত্রি যাপনের সুযোগ রয়েছে।

কিভাবে যাবেন

ঢাকার কল্যাণপুর গাবতলী ও মহাখালী হতে নড়াইল জেলায় সরাসরি এর ব্যবস্থা রয়েছে এসি ১০০০ টাকা ননএসি ৫০০ টাকা।

বাস
একে ট্রাভেলস কল্যাণপুর মোবাইল-01709964207, নড়াইল মোবাইল-01709964202

হানিফ এন্টারপ্রাইজ কল্যানপুর মোবাইল-01713049573

অনলাইনে টিকিট বুকিং এর জন্য, সহজ-16374
বাস বিডি-16460

ট্রেন

ঢাকা থেকে নড়াইল সরাসরি কোন ট্রেন নেই তবে ঢাকা থেকে যশোর জেলায় ট্রেনে যেয়ে সেখান থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে বাস বা সিএনজি যোগে নড়াইল জেলায় যেতে পারেন।
সকল ট্রেনের ভাড়া ৪৭৫ টাকা

ঢাকা কমলাপুর থেকে যশোর

বেনাপোল এক্সপ্রেস 12: 40 Am পৌঁছায় 07:50 Am
বন্ধ বৃহস্পতিবার

সুন্দরবন এক্সপ্রেস ছাঁড়ে 6:20 Am পৌঁছায় 2:20 pm
বন্ধ বুধবার

চিত্রা ছাঁড়ে 7:00 pm পৌঁছায় 3:40 Am
বন্ধ সোমবার

যশোর থেকে ঢাকা কমলাপুর

চিত্রা ছাঁড়ে 9 Am পৌঁছাই 06:20 Am

বেনাপোল এক্সপ্রেস ছাঁড়ে 02:07 pm মিনিটে পৌঁছায় 08:55 pm

সুন্দরবন এক্সপ্রেস ছাঁড়ে 9:30 Pm পৌঁছায় সকাল 5:40 Am

[ নড়াইল জেলা সদর থেকে সড়কপথে লোহাগাড়া উপজেলা ১৪ কিলোমিটার পথ। বাস বা সিএনজি যোগে ২৫-৩০ মিনিট সময় লাগে আর ভাড়া পড়বে ২০-২৫ টাকার মতো। লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে নীহাররঞ্জন গুপ্তের বাড়ি সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার পথ। ভ্যান বা অটো যোগে ২০-২৫ টাকায় সেখানে যাওয়া যায়]
কোথায় থাকবেন
লোহাগড়া উপজেলা ডাকবাংলোতে থাকতে পারবেন তার জন্য আগে থেকে অনুমতি নিয়ে রাখতে হবে।
[এছাড়া নিরিবিলি পিকনিক স্পট রাত্রিযাপনের সুযোগ রয়েছে ,যোগাযোগ: ০১৭১১০৭৪০৮৫ ]

নড়াইল শহরে থাকার মতো বিভিন্ন মানের হোটেল ও সার্কিট হাউজ রয়েছে।

জেলা পরিষদ ডাকবাংলো ফোন-0481-62530
মর্ডান আবাসিক হোটেল মোবাইল-01917835028
নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ড ফোন-0481-62772

[ হোটেল গুলোর ভাড়া তিনশ থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে পড়বে]

Article Categories:
নড়াইল
banner

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।