রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি

 লিখেছেনঃ
  ডিসে. 4, 2019
  828 Views
0 0

টুকিটাকি

কবি একটি চিঠিতে লিখেছেন:

‘আমার যৌবন ও প্রৌঢ় বয়সের সাহিত্য রস সাধনার তীর্থস্থান ছিল পদ্মা- প্রবাহিত শিলাইদহ পল্লীতে।’

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিময় স্থান কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়ি।কবির জীবন ও সাহিত্যের একটা বড় অংশ এই বাড়ির সঙ্গে জড়িত। কুষ্টিয়া জেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত কুঠিবাড়ি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই বাড়িতে বেশ কয়েকবার পরিবার নিয়ে এসেছেন। এই বাড়িতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত কাব্যগ্রন্থ গীতাঞ্জলির একটি বড় অংশ সহ বহু কালজয়ী লেখা লিখেছিলেন।

বর্তমানে এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন। সোনার তরী, উর্বশী, দুই বোন, নববর্ষা, উপহার, প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ। নাটকের মধ্যে চিরকুমার-সভা, গোড়ায় গলদ, চিত্রাঙ্গদা, রাজা, অচলায়তন। ছোটগল্পের মধ্যে শান্তি, সমাপ্তি, শুভদৃষ্টি, নষ্টনীড় এছাড়াও লিখেছেন অনেক গান।২৫ বৈশাখ কবির জন্মবার্ষিকীতে এখানে নানা আয়োজন হয়ে থাকে আর সে আয়োজনের সাক্ষী হতে দেশ-বিদেশ থেকে হাজারো কবি ভক্ত এই শিলাইদহ পল্লীতে ভিড় জমায়। পাকিস্তান আমলে ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই বাড়িটি সংরক্ষিত হয়।

ইতিহাস

 ১৮৪০-১৮৫০ সালের মধ্যে সেলি নামে এক নীল ব্যবসায়ী  প্রথমে নীলকুঠি তৈরি করেন  এখানে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর উনিশ শতকের  প্রথমার্ধে কুষ্টিয়া অঞ্চলে জমিদারি শুরু করেন। ১৮৬০ সালে নীলকরদের ব্যবসা গুটিয়ে নিলে  তারা এখান থেকে চলে যান আর নীলকুঠি কিনে নেন ঠাকুর পরিবার।বংশানুক্রমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৮৯ সালে জমিদার হয়ে এখানে আসেন। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি জমিদারী পরিচালনা করেন ও সেই বছরই তিনি কলকাতায় ফিরে যান। এই বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ  ঠাকুরের সাথে দেখা করতে এসেছিলেন বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু দ্বিজেন্দ্রলাল  রায় সহ আরো অনেক জ্ঞানীগুণী ব্যক্তি।

অবকাঠামো

 নিচতলায় নয়টি দোতালায় সাতটি তিনতলায় দুটি কক্ষ সহ মোট ১৮ টি কক্ষে ৮৩ টি জানালা-দরজা রয়েছে। কুঠি বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহৃত আসবাবপত্র রয়েছে। সেইসময়ের দুর্লভ ছবি, পালকি,পালঙ্ক,  রবি ঠাকুর যে নৌকায় চড়ে পদ্মায় ঘুরতেন সেই নৌকা সহ অনেক কিছু। যা এখানে অবস্থিত জাদুঘরটিতে স্থান পেয়েছে। জাদুঘরটি সরকারিভাবে পরিচালনা করা হয়।

অবস্থান

এটি বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলায় শিলাইদহ গ্রামে অবস্থিত।

টিকেট প্রাপ্তিস্থান

জাদুঘরের গেটের দক্ষিণ পাশে একটা টিকিট কাউন্টার রয়েছে। জনপ্রতি ১৫ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে জাদুঘরটি দেখতে পারবেন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রবেশ মূল্য ৫ টাকা।

বন্ধ-খোলার সময়সূচী

গ্রীষ্মকালে সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত এটি খোলা থাকে। শীতকালে সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা। শুক্রবারে জুম্মার নামাজের জন্য ১২:৩০ থেকে ৩:৩০ পর্যন্ত বন্ধ থাকে। রবিবার সাধারণ ছুটি এবং সোমবার বেলা দুইটা থেকে খোলা থাকে।

কিভাবে যাবেন
ঢাকার কল্যাণপুর গাবতলী ও মহাখালী হতে কুষ্টিয়া জেলায় সরাসরি এসি নন-এসি উভয় ধরনের বাস এর সুব্যবস্থা রয়েছে। এসি ১০০০ টাকা আর নন এসি ৪৫০ টাকা ভাড়া।
বাস
শ্যামলী পরিবহন (গাবতলী মোবাইল- 01865068925, কুষ্টিয়া মোবাইল- 01711942709)
জে আর পরিবহন( কল্যাণপুর মোবাইল- 01767280295, কুষ্টিয়া মোবাইল-01767280287)
এছাড়া এস বি সুপার ডিলাক্স এস কে সুপার ডিলাক্স চলাচল করে ঢাকা টু কুষ্টিয়া।
অনলাইনে টিকিট বুকিং এর জন্য সহজ-  16374
বাস বিডি-16460
ট্রেন

ঢাকা থেকে কুষ্টিয়াগামী বেশ কয়েকটি ট্রেন যাওয়া আসা করে। সে ক্ষেত্রে কুষ্টিয়া শহরের অদূরেই পোরাদাহ্ স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে অটোরিক্সাযোগে  ১০ টাকা ভাড়া দিয়ে কুষ্টিয়া শহর যেতে পারেন।

ঢাকা কমলাপুর থেকে কুষ্টিয়ার পোড়াদহ স্টেশন

সুন্দরবন প্রভাতী ছাঁড়ে 6:20 Am পৌঁছায় 12:21Pm
বন্ধ বুধবার

চিত্রা ছাঁড়ে 7:00 Pm পৌঁছাই
12:57 Am
বন্ধু সোমবার

কুষ্টিয়ার পোড়াদহ স্টেশন থেকে ঢাকার কমলাপুর

চিত্রা ছাঁড়ে  11:58 Amপৌঁছায় 6:20 Pm
সুন্দরবন এক্সপ্রেস ছাঁড়ে 11: 40 Pm পৌঁছায় 05:40 Amসকল ট্রেনের ভাড়া ৩৮০ টাকা
[ কুষ্টিয়া শহর হতে শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি ২০ কিলোমিটার।  কুষ্টিয়া শহর হতে বাস বা সিএনজি যোগে কুমারখালী উপজেলা নেমে সেখান থেকে সিএনজি অটোরিকশায় রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি যেতে পারেন। কুষ্টিয়া থেকে কুমারখালী উপজেলা বাস স্ট্যান্ড ৩০-৩৫ মিনিট সময় লাগে আর  ভাড়া পড়বে ৩০ টাকা]
কোথায় থাকবেন
কুষ্টিয়া শহরে থাকার মতো বিভিন্ন মানের হোটেল ও সার্কিট হাউজ রয়েছে।
সার্কিট হাউস কুষ্টিয়া ফোন-071-61400
জেলা পরিষদ ডাকবাংলো কুষ্টিয়া
ফোন-071-62390
হোটেল নূর ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল-01722605459
আজমেরী রেসিডেন্সিয়াল হোটেল মোবাইল-01721507903
কুমারখালী উপজেলার সদর থাকতে চাইলে ডাকবাংলোতে থাকতে পারেন সে জন্য আগে থেকে অনুমতি নিয়ে রাখতে হবে।

[ হোটেল গুলোর ভাড়া তিনশ থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে পড়বে]

Article Categories:
খুলনা
banner

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।