ঢোল সমুদ্র দীঘি

 লিখেছেনঃ
  ডিসে. 11, 2019
  667 Views
0 0

কারো কারো মতে সমুদ্রের ন্যায় বিশাল আকৃতি দেখায় বলেই এই দীঘির নামকরণ হয় ঢোলসমুদ্র দীঘি। কয়েকশো বছরের পুরনো এই দিঘীটি  ১৭ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। ঝিনাইদহ জেলায় যে কয়েকটি দিঘী রয়েছে তার মধ্যে সর্ববৃহৎ দীঘি এটি। এর আছে একটি সুনির্দিষ্ট ইতিহাস।

মুকুট রায় নামক এক প্রভাবশালী জমিদার এ অঞ্চলে বসবাস করতেন তিনি জমিদার হলেও তার জীবন যাপন ও চালচলনে যেকোনো প্রভাবশালী রাজার চেয়ে কোন অংশে কম ছিলেন না তিনি। সৈন্য ছিল হাজার খানেক, ২০ টা হাতি, পঞ্চাশটা ঘোড়া। সৈন্যদের থাকার জন্য ছিল বিশাল বিশাল ঘর এবং ঘোরার জন্য ছিল আস্তাবল। তিনি যখন বের হতেন তিনি  সৈন্য সামন্ত, হাতি ,ঘোড়া নিয়ে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যেতেন।

তার এলাকায় তিনি বেশকিছু দীঘি খনন করেন। এলাকার উন্নয়নের জন্য তিনি বেশ কিছু স্থাপনা  তৈরি করেন। জনদরদি জমিদার হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। ঢোলসমুদ্র দীঘি তার অন্যতম কীর্তি। মূলত এলাকাবাসীর দৈনন্দিন কার্যক্রম ও আশেপাশের কৃষিজমির পানি ব্যবহারের জন্যই এটি নির্মিত হয়। একটা সময় এলাকায় পানির বেশ অভাব দেখা দেয়। তখন তিনি এই দীঘিটি নির্মাণ করেন। মুকুট রায়ের এ অঞ্চলটি আগে বিজয়পুর বলে পরিচিত ছিল যা তার রাজধানী ছিল। এখান থেকেই তিনি তার জমিদারি পরিচালনা করতেন।

কথিত আছে  কয়েক হাজার শ্রমিক এই দীঘি খনন করেন। খনন সম্পন্ন হলে এখানে পানির দেখা পেল না কেউ। একদিন রাজা স্বপ্ন দেখলেন তার সহধর্মিনী যদি দিঘীতে নেমে পুঁজো দেয় তবেই পানি উঠবে এই দিঘিতে। স্বপ্নকে সত্যি করতেই রানী একদিন দিঘির মাঝখানে নেমে  পুঁজো দিতে থাকলেন আর তখন দিঘীর নিচ থেকে পানি উঠতে থাকলো ঠিক সে সময় এলাকাবাশী  ঢাক-ঢোল পিটিয়ে আনন্দ-উৎসব করতে লাগলো আর তখন থেকেই এই দিঘির নাম হল  ঢোল সমুদ্র দিঘী।

অবস্থান
[ ঝিনাইদহ শহর থেকে ঢোল সমুদ্র দীঘি চার কিলোমিটার পথ। শহরের যেকোনো স্থান থেকে অটো রিক্সা বা সিএনজি যোগে যেতে পারেন। ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মত সময় লাগে আর ভাড়া পড়বে ৩০  টাকার মতো]
কিভাবে যাবেন
ঢাকার কল্যাণপুর গাবতলী ও মহাখালী হতে জিনাইদহ জেলায় সরাসরি এসি-নন এসি বাস এর ব্যবস্থা রয়েছে। এসি ১০০০ টাকা ননএসি ৪৫০ টাকা ভাড়া।
বাস
জে আর পরিবহন (কল্যাণপুর মোবাইল-01767280295, ঝিনাইদহ মোবাইল-01711168043)
পূর্বাশা পরিবহন কল্যাণপুর মোবাইল-01771028864, ঝিনাইদহ মোবাইল-01718100453)
এছাড়া হানিফ, শ্যামলী, স্কাইলাইন রয়েল বাসগুলো ঢাকা টু ঝিনাইদহ রুটে চলাচল করে।
অনলাইনে টিকিট বুকিং এর জন্য, সহজ-16374
বাস বিডি-16460ট্রেনঢাকা থেকে খুলনা গামী ট্রেন সুন্দরবন প্রভাতী ঝিনাইদহ মোবারকগঞ্জ স্টেশন থামে। সেখান থেকে বাস বা সিএনজি যোগে ঝিনাইদহ শহর যেতে পারেন।৪০-৪৫ মিনিট সময় লাগে আর ভাড়া পড়বে ৩০-৩৫ টাকার মতো।

সুন্দরবন প্রভাতী ঢাকা থেকে ছাঁড়ে 6:20 Am
ভাড়া  ৪৫৫ টাকা

কোথায় থাকবেন

নলডাঙ্গা রাজবাড়ি রিসোর্ট এর কটেজে প্রয়োজনে রাত্রি যাপন করতে পারবেন। কালীগঞ্জ উপজেলা ডাকবাংলোতে থাকতে পারবেন তার জন্য আগে থেকে অনুমতি নিয়ে রাখতে হবে। এছাড়া ঝিনাইদহ শহরে বেশ কিছু হোটেল রয়েছে যেখানে রাত্রি যাপন করতে পারেন।হোটেল জামান মোবাইল-01711152954
ঝিনাইদহ সার্কিট হাউজ মোবাইল-01733074606
সৃজনী রেস্ট হাউস ফোন-045162497
ব্রাক রেস্ট হাউস-0451-62880  [ ৩০০ থেকে  ৩ হাজার টাকার মত হোটেল গুলোর ভাড়া পরবে]

Article Categories:
ঝিনাইদহ
banner

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।