ডিসে. 24, 2019
901 Views
0 0

প্রবাজপুর শাহী মসজিদ

Written by

টুকিটাকি

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা গুলোর মধ্যে সাতক্ষীরার প্রবাজপুর শাহী মসজিদ অন্যতম। কালীগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে যমুনা ইছামতি নদীর প্রধান তীরবর্তী এলাকায় প্রবাজ পুর গ্রামে কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে মুঘল আমলে নির্মিত ঐতিহাসিক প্রবাজপুর শাহী জামে মসজিদ। এই মসজিদটি ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে মুঘল সাম্রাজ্যের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে অবস্থান করছে এই অঞ্চলে।  ধর্ম নির্বিশেষে অনেকেই তাদের মনোবাসনা পূর্ণ করার জন্য মানত করে যা পূর্ণও হয়। এটি একটি সংরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা।

অবস্থান

এটি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলা শহর হতে ৪০ কিলোমিটার দূরে উপজেলা কালিগঞ্জ সদর হতে ৪ কিলোমিটার দূরে প্রবাজপুর নামক গ্রামে অবস্থিত।
প্রবাজপুর শাহী মসজিদ

ধারণা করা হয় ১৭ শতকের শেষের দিকে ১৬৯৩ সালে মসজিদটি নির্মিত হয়। আওরঙ্গজেব তার শাসনামলে  প্রায় ১৭ একর জায়গা দান করেছিলেন এই মসজিদের জন্য। অনেকের মধ্যে  কথা প্রচলিত আছে; মসজিদটি এক রাতে জঙ্গল কেটে তৈরি হয়েছিল। মূলত আওরঙ্গজেব এর নির্দেশে তাঁর সুবেদার প্রবাজ খাঁ মসজিদ টি নির্মান করেন। এই প্রবাজ খাঁর  নামানুসারে পরবর্তীতে এই গ্রামের নাম হয় প্রবাজপুর। আর মসজিদের নাম রাখা হয় প্রবাজপুর শাহী মসজিদ।

প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে দিল্লি সালতানাত ও মুঘল শাসনামলে খানজাহান আলী, বাগদাদী সহ আরো অনেক সুফি সাধকরা ধর্ম প্রচারে ও বাংলা দখলে মনোনিবেশ করেন । তখন দক্ষিণবঙ্গে  বসবাসের সাথে তারা নানা স্থাপনা গড়ে তোলেন যার মধ্যে মসজিদ অন্যতম। তেমনই একটি মসজিদ প্রবাজপুর শাহী মসজিদ।

মসজিদটি এক গম্বুজবিশিষ্ট। বাইরের অংশের আয়তন ৪৭ ফুট × ৩৪ ফুট। ৭ ফুট প্রশস্ত একটি বারান্দা ছিল বর্তমানে যা ভগ্নপ্রায়। টাঙ্গাইলের আতিয়া মসজিদ, খনিয়াদিঘি মসজিদ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের চামচিকা মসজিদের মধ্যে সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায় এই মসজিদটির। মসজিদে প্রবেশের জন্য মোট ৬ টি দরজা রয়েছে।  অন্তর্ভাগে পশ্চিমে মোট তিনটি নকশা খচিত মেহরাব লক্ষ্য করা যায়।

একসাথে ১৫০ থেকে ২০০ মানুষ এই মসজিদে নামাজ পড়তে পারে। মসজিদটির  পোড়ামাটির দৃষ্টিনন্দন নকশা সহজেই যেকোনো পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। ১৯৫৫ সালে এটি শেষবার সংস্কার করা হয়। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন।

কিভাবে যাবেন

বাস

ঢাকার কল্যাণপুর গাবতলী কমলাপুর টেকনিক্যাল থেকে সাতক্ষীরা যাওয়ার বাস পুরো দিনই পাওয়া যায়।

সোহাগ পরিবহন( কমলাপুর মোবাইল-01926696262, সাতক্ষীরা মোবাইল-01711420553)
কে লাইন পরিবহন( গাবতলী মোবাইল-01708434842, সাতক্ষীরা মোবাইল-01708434840, সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ উপজেলা মোবাইল-01708434848, শ্যামনগর-01708434869)

একে ট্রাভেলস( কল্যাণপুর মোবাইল-01709964208,সাতক্ষীরা মোবাইল-01709964192)

নন এসি ৫৫০ টাকা এসি ১২০০ টাকা ভাড়া।

অনলাইনে টিকিট বুকিং এর জন্য, সহজ-16374
বাস বিডি-16460

ট্রেন

ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা সরাসরি কোন ট্রেন নেই তবে ঢাকা থেকে খুলনা জেলায় ট্রেনে যেয়ে সেখান থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে বাস বা সিএনজি যোগে সাতক্ষীরা জেলায় যেতে পারে।

ঢাকা কমলাপুর থেকে খুলনা

সুন্দরবন প্রভাতী ছাঁড়ে 6:20 Am পৌঁছায় 4:20 pm

বন্ধ বুধবার

চিত্রা ছাঁড়ে 07:00 Pm পৌঁছায় 05:10 Am

বন্ধ মঙ্গলবার

সকল ট্রেনের ভাড়া ৫২৫ টাকা

খুলনা থেকে ঢাকা কমলাপুর

চিত্রা ছাঁড়ে 08:40 Am পৌঁছায় 06:20 Pm

সুন্দরবন ছাঁড়ে  8:30 Pm পৌঁছায় 05:40 Am

[ সাতক্ষীরা জেলা থেকে কালীগঞ্জ উপজেলায় ৪০ কিলোমিটার পথ। বাস বা সিএনজি যোগে ৭০-৮০ মিনিটের মত সময় লাগে আর ভাড়া পড়বে ৫০-৬০ টাকার মতো। কালীগঞ্জ উপজেলা সদর হতে বাস বা ভ্যান গাড়ি অথবা অন্যান্য পরিবহন যোগে কালীগঞ্জ থেকে চার কিলোমিটার দূরে গোপালপুরে প্রবাজপুর শাহী মসজিদ দেখতে যেতে পারেন।]

কোথায় থাকবেন

[কালীগঞ্জ উপজেলায় থাকার মত তেমন কোন হোটেল নাই তবে এখানে সরকারি রেস্ট হাউস ও উপজেলা ডাকবাংলো রয়েছে। থাকার জন্য উপজেলা ডাকবাংলো কর্তৃপক্ষের সাথে আগে থেকে যোগাযোগ করে আসতে হবে]

এছাড়া দিনে যেয়ে দিনেই সাতক্ষীরা শহরে এসে থাকতে পারবেন।

সাতক্ষীরা শহরে থাকার মতো বিভিন্ন মানের হোটেল ও সার্কিট হাউজ রয়েছে।
টাইগার পয়েন্ট গেস্টহাউস মোবাইল-01720-510199
সুন্দরবন হোটেল মোবাইল-01710126624
হোটেল সৌদিয়া মোবাইল-01711450030
হোটেল টাইগার প্লাস মোবাইল-01774999000

[হোটেল গুলোর ভাড়া ৩০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে পড়বে]

Article Categories:
সাতক্ষীরা
banner

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।