দেশে রেলসেতু সংখ্যা প্রায় তিন হাজারেরও বেশি তবে বৃহত্তম রেল সেতু হার্ডিঞ্জ ব্রিজ স্থাপত্য শিল্পে অনন্য নিদর্শন এটি। দেশের দর্শনীয় স্থান সমূহের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে এই সেতুটি। উনিশ শতকের শেষদিকে এবং বিশ শতকের শুরুতে পদ্মা নদীর পূর্ব তীরে সারা ঘাট ছিল দেশের অন্যতম বৃহৎ নদী বন্দর।
দার্জিলিং ও ভারতের পূর্বাংশ আসামের রাজ্যে সবার যাতায়াতের সুবিধার জন্য রেলপথ সম্প্রসারণ এর জন্য অবিভক্ত ভারত সরকার তখন পদ্মা নদীর উপর ব্রিজ তৈরির প্রস্তাব পেশ করেন। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল এর সাথে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের শতাব্দীকাল সরাসরি যোগাযোগ ধরে রেখেছে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে এই হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের শতবর্ষ পূর্ণ হয়।
মূলত অবিভক্ত বাংলায় ১৮৮৯ সালে ভারতের ত্রিপুরা নাগাল্যান্ড প্রদেশের সাথে পশ্চিমবঙ্গের যোগাযোগ সহজ করার জন্য পদ্মা নদীর উপর সেতু নির্মাণের জন্য ভারত সরকার একটি প্রস্তাব পেশ করে। পরবর্তীতে ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে সেতু নির্মাণের মঞ্জুরী লাভের পর ব্রিটিশ প্রকৌশলী রবার্ট বেলস সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯১০ খ্রিস্টাব্দে সেতু নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের শেষের দিকে পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এই সেতুটি নির্মাণের জন্য প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক দীর্ঘ পাঁচ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে। ১৯১৫ সালের শেষের দিকে এর কাজ সমাপ্ত হয়। অবিভক্ত ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ এর নামানুসারে সেতুটির নাম করা হয় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দক্ষিণবঙ্গের যাতায়াতের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই হার্ডিঞ্জ ব্রিজ । সে সময় এই সেতুটির ওপরে বোমা ফেলা হলে ১২ নম্বর স্প্যানটি ধ্বংস হয়ে যায়। পরবর্তীতে এটি মেরামত করে যাতায়াতের জন্য উপযুক্ত করা হয়।
অবস্থান
এটি বাংলাদেশের রেলওয়ে জংশন ঈশ্বরদী হতে ৮ কিলোমিটার দূরে পাকশী ইউনিয়নে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ অবস্থিত। ঈশ্বরদী উপজেলা সদর হতে প্রায় ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে পাকশী ইউনিয়ন পদ্মা নদীর উপর সেতু টি অবস্থিত।
কিভাবে যাবেন
বাস
ঢাকার কল্যাণপুর,গাবতলী, টেকনিক্যাল থেকে পাবনা যাওয়ার বাস প্রতি ঘন্টায় পাওয়া যায়।
সরকার ট্রাভেলস (টেকনিক্যাল মোবাইল-01718508727, নিউ বাস টার্মিনাল কাউন্টার পাবনা মোবাইল-01725442646)
বাস সার্ভিসের জন্য Shohoz call-16374
Busbd.com call-16460
ট্রেন
ঢাকা কমলাপুর থেকে ঈশ্বরদী
বেনাপোল এক্সপ্রেস ছাড়ে 12:40 Am পৌঁছায় 05:10 Am ভাড়া ৩১৫ টাকা।
বন্ধ বৃহস্পতিবার
সুন্দরবন প্রভাতী ছাড়ে 6:20 Am পৌঁছায় 11:30 Am
বন্ধ বুধবার
চিত্রা ছাড়ে 7:00 Pm পৌঁছায় 11:40 Am
বন্ধ সোমবার
ঈশ্বরদী থেকে ঢাকা কমলাপুর
বেনাপোল এক্সপ্রেস 4:35Pm পৌঁছায় 08:55 Pm
চিত্রা ছাড়ে 12:55 pm পৌঁছে 06:20 Pm
সুন্দরবন প্রভাতী 12:45 Am 05:40 Am
[ ইশ্বরদী স্টেশন ট্রেন থেকে নেমে সেখান থেকে বাস বা সিএনজি যোগে পাবনা শহর যেতে পারেন। প্রায় ৫৬ কিলোমিটার রাস্তা ১:৩০ মিনিটের মত সময় লাগে আর ভাড়া পড়বে ৬০-৭০ টাকা। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দেখার উদ্দেশ্য থাকলে ঈশ্বরদী মোটামুটি মানের হোটেল আছে সেখান থেকেই হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দেখতে পারেন। ঈশ্বরদী সদর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ অবস্থিত সিএনজি বা অটোতে যেতে পারেন]
কোথায় থাকবেন
পাবনা শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল ও মোটেল রয়েছে।
সার্কিট হাউজ পাবনা ফোন-0731-65088 ডিসি রোড, পাবনা।
ইডেন বোডিং, পাবনা মোবাইল-01714423443
হোটেল টাইম গেস্ট, পাবনা মোবাইল-01711402677
[ ঈশ্বরদী উপজেলা সদর থাকতে চাইলে ডাকবাংলোতে থাকতে পারেন সে জন্য আগে থেকে অনুমতি নিয়ে রাখতে হবে]