ছোট সোনা মসজিদ

 লিখেছেনঃ
  নভে. 12, 2019
  633 Views
1 0
wikipedia

 দেশের সর্ব পশ্চিমের জেলার পরতে পরতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য এই ছোট সোনা মসজিদের আছে একটি সুপ্রাচীন ইতিহাস। ১৫ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে ১৬ শতকের শেষ অব্দি পর্যন্ত এ অঞ্চল শাসন করেছেন সুলতানি ও মোগল শাসকরা। ধারণা করা হয় সুলতানি শাসন আমলে এই মসজিদ নির্মিত হয়।

ওয়ালী মোহাম্মদ নামক একজন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ১৪৯৩ থেকে ১৫১৯  খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটি নির্মাণের সময় এর সামনের দিকে সোনালী আস্তরণ দেওয়া হয়েছিল যেখানে সূর্যের আলো পরতেই উজ্জ্বল আলো ছড়াতো চারিদিকে। সোনার রঙের  কারণে মসজিদটির নামকরণ হয় ছোট সোনা মসজিদ।

মসজিদে প্রবেশপথে একই আকৃতির পাঁচটি নকশা খচিত দরজা রয়েছে। মসজিদের বাইরে যে কোন স্থান থেকে তাকালে চারটি গম্বুজ চোখে পড়ে। মূলত এই মসজিদটি পাঁচ গম্বুজ বিশিষ্ট হলেও পাঁচটি গম্বুজ কখনো একসাথে দেখা যায় না।  দৈর্ঘ্য প্রস্থে মসজিদটি ৮২×৫২.৫ ফুট আয়তন বিশিষ্ট। মসজিদের দেয়ালের পুরুত্ব ৬ ফুট।

মসজিদটির অভ্যন্তরভাগ কালো  আটটি স্তম্ভ দ্বারা উত্তর-দক্ষিণে তিনটি আইল ও পূর্ব-পশ্চিমে পাঁচটি সারিতে বিভক্ত।এই পাঁচটি  সারির মাঝের সারিটি ১৪.৫” চওড়া ও বাকিগুলো ১১.৫” চওড়া। । প্রতিটি নকশায় অর্ধবৃত্তাকার।মসজিদের অভ্যন্তরে ৮ টি স্তম্ভ ও চারপাশের দেয়ালের উপর তৈরি হয়েছে মসজিদের ১৫ টি গম্বুজ। মসজিদের ভিতর ও বাহিরে একসাথে প্রায় ৫ শতাধিক মুসল্লি একসাথে নামাজ পড়তে পারে।

অবস্থান

এটি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর হতে ৩৭ কিলোমিটার দূরে উপজেলা শিবগঞ্জ এর সন্নিকটে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পাশে অবস্থিত।

কি কি দেখবেন

মসজিদে ঢুকতেই চোখে পড়বে তোরন। তোরণণের সামান্য পূর্বে বাধানো মঞ্চের উপর উত্তর-দক্ষিণ বরাবর কবর। দুটি কবরই কালো পাথরের উপরে উঠে যাওয়া  সিঁড়িযুক্ত।  কানিংহামের অনুমান অনুসারে এ দুটি ছিল আলী মোহাম্মদ ও তার পিতা আলীর। উত্তর দিকে একটি দিঘী রয়েছে ।

[ দক্ষিণ-পূর্ব দিকে দুটো কবর রয়েছে১.৩ মিটার উঁচু একটি পাচিল দিয়ে ঘেরা । যা বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর ও মেজর নাজমুল হকের কবর।এঁরা দুজনেই  ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন]

কিভাবে যাবেন

বাস

ঢাকার কল্যাণপুর,গাবতলী, মহাখালী কলাবাগান থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাওয়ার বাস প্রতি আধা ঘণ্টা পরপর।

ন্যাশনাল ট্রাভেলস ( কল্যাণপুর মোবাইল-01713228286, শিবগঞ্জ-01755583942)

দেশ ট্রাভেলস( কল্যাণপুর-017626844401 শিবগঞ্জ-01762684412)

গ্রামীন ট্রাভেলস, তুহিন, একতা( মহাখালী-01711103191) সরাসরি চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পৌঁছায়।

ভাড়া নন এসি ৫৬০ ও এসি ১১০০টাকা ।

[ এছাড়া ঢাকা থেকে রাজশাহী এসে রাজশাহী থেকেও লোকাল বাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ যেতে পারেন রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগন্জ   ৭০ কিলোমিটার বাস বা  সি এন জি যোগে যেতে পারেন। দেড় ঘন্টার মত সময় লাগে। ভাড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে শিবগঞ্জ সোনামসজিদ  ৩৭ কিলোমিটার সিএনজি ,বাস বা অটোতে যেতে পারেন সময় লাগে ১ ঘন্টার মতো ভাড়া পড়বে ৩০-৩৫ টাক]

ট্রেন

বনলতা এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে ছাড়ে 01:15 pm চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌঁছায় 07:10 pm ভাড়া  ৪৪০টাকা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছাড়ে 05:50 am ঢাকায় পৌঁছায় 11:40 am
বন্ধ -শুক্রবার

পদ্মা এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে ছাড়ে11:10 pm চাঁপাইনবাবগঞ্জপৌঁছায় 05:50 am ভাড়া ৪০৫ টাকা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছাড়ে 02:30 pm ঢাকায় পৌঁছায় 9:38 pm
বন্ধ -মঙ্গলবার

থাকবেন কোথায়

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে  মোটামুটি মানের কিছু হোটেল আছে । আপনারা চাইলে দিনে যেয়ে সেই দিনই ফিরে রাজশাহীতে থাকতে পারেন।
এছাড়া শিবগঞ্জ থাকতে চাইলে উপজেলা ডাকবাংলোতে থাকতে পারবেন। এর জন্য আগে থেকে অনুমতি নিতে হবে।

চাপাইনবাবগঞ্জে থাকার মত কিছু হোটেল।
হোটেল স্বপ্নপুরী ,মোবাইল- 01711416041
হোটেল আল নাহিদ ,মোবাইল- 01713376902
স্কাইভিউ ইন্টারন্যাশনাল ,মোবাইল-
01739035876
হোটেল রংধনু,  মোবাইল- 01712339687

[ হোটেল গুলোর ভাড়া ৩০০ থেকে থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে পড়বে]

banner

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।