১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদের এক বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয় দক্ষিণ এশিয়ার সর্ব প্রথম জাদুঘর যা বরেন্দ্র জাদুঘর বলে পরিচিত। এটি রাজশাহী শহরের হাতেমখাঁ নামক এলাকায় অবস্থিত। শত বছরের অধিক পুরনো জাদুঘরটি ইতিহাসের শিকড় ধারন করে আছে যা প্রমাণ করে এদেশের প্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে।
এই বরেন্দ্র জাদুঘরে বাংলাদেশের যত প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রহ করা আছে তা আর অন্য কোন জাদুঘরে নেই। জাদুঘরের অবসরপ্রাপ্ত প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রাহক আব্দুস সালাম মণ্ডল বর্তমানে জাদুঘরে সংরক্ষিত প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শনসমূহের দুই-তৃতীয়াংশই তিনি একা সংগ্রহ করেছেন। এই প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন গুলো সংগ্রহ করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার মৃত্যুর সম্মুখীন হয়েছেন তিনি।
বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক এটি পরিচালিত হয়। ১৯১০ সালে জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ এই জাদুঘরটি পরিদর্শন করেন যার মধ্যে অন্যতম মহাত্মা গান্ধী ও নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু। এই জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেন সেই সময়ে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের সহকারী শিক্ষক রামপ্রসাদ চন্দ্র।
জমিদার শরৎকুমার রায় আইনজীবী অক্ষয় কুমার মৈত্র সহ বেশ কিছু গুণীজন ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এবং সে বছরই তারা রাজশাহী অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় নানা নিদর্শন সংগ্রহ করেন।
মূলত রাজশাহী বরেন্দ্র জাদুঘর টি যে স্থানে অবস্থিত এই জায়গাটি দান করেছিলেন জমিদার শরৎকুমার রায় । ১৯১০ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হলেও এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯১৩ সালে। ১৯১১ সালের দিকে কলকাতা জাদুঘর হঠাৎ বরেন্দ্র জাদুঘর এর সকল নিদর্শন তাদের বলে দাবি করলে গভর্নর কারমাইকেলের প্রচেষ্টায় তা বরেন্দ্র জাদুঘরের বলে প্রজ্ঞাপন জারি হয়।
প্রায় ১২০০০ নিদর্শন নিয়ে এই জাদুঘরের বর্তমান অবস্থান। সিন্ধু সভ্যতার আদি নিদর্শন দেখতে চাইলে এই জাদুঘরে আসতে হবে। আরো আছে মহেঞ্জোদারো সভ্যতা, বুদ্ধমূর্তি, ভৈরবের মাথা, চন্দ্রগুপ্ত আমলের স্বর্ণমুদ্রা, মোঘল সাম্রাজ্যের মুদ্রা সহ আরো অনেক কিছু। প্রায় পাঁচ হাজারের অধিক পুথি রয়েছে যার মধ্যে সাড়ে তিন হাজার সংস্কৃত আর বাকিগুলো বাংলায় রচিত।
সংগ্রহশালা
° প্রথম প্রদর্শনকোষ্ঠে নওগাঁর পাহাড়পুর থেকে উদ্ধারকৃত ২৫৬ টি ঐতিহাসিক সামগ্রী রয়েছে।
° তৃতীয় ও চতুর্থ প্রদর্শনকোষ্ঠে রয়েছে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি।
° পঞ্চম প্রদর্শনকোষ্ঠে আছে বুদ্ধমূর্তি।
° সপ্তমে প্রদর্শনকোষ্ঠে সংরক্ষিত আছে বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নিদর্শনসমূহ।
জাদুঘরটি সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। যেহেতু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত হয় সেহেতু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটির দিনগুলোতে এই জাদুঘর বন্ধ থাকে
কিভাবে যাবেন
[ রাজশাহী ঢাকা বাস স্ট্যান্ড ও রাজশাহী স্টেশন পাশাপাশি হওয়াই আপনারা বাস বা ট্রেন থেকে নেমে একটু হাটলেই বরেন্দ্র জাদুঘর যাওয়ার জন্য অটো বা রিকশা খুব সহজেই পেয়ে যাবেন। ১০-১৫ মিনিটের মত সময় লাগে আর ভাড়া পড়বে ২০ টাকার মতো]
বাস
ঢাকার কল্যাণপুর, গাবতলী,মহাখালী, কলাবাগান থেকে রাজশাহী যাওয়ার বাস প্রতি আধা ঘণ্টা পরপর পাওয়া যায়।
ন্যাশনাল ট্রাভেলস ( কল্যাণপুর মোবাইল- 01713228286, রাজশাহী শিরোইল বাস স্ট্যান্ড
মোবাইল-0721-771240)
শ্যামলী পরিবহন( টেকনিক্যাল মোবাইল- 01865068922, রাজশাহী শিরোইল বাস স্ট্যান্ড মোবাইল-01791963363)
দেশ ট্রাভেলস (কল্যাণপুর মোবাইল-017626844401, রাজশাহী শিরোইল বাস স্ট্যান্ড মোবাইল-01762684415) এছাড়া তুহিন একতা ও গ্রামীণ ট্রাভেলস এই লাইনে যাতায়াত করে। ভাড়া নন এসি ৪৮০ টাকা এসি ১০০০টাকা।
ট্রেন
ঢাকা থেকে রাজশাহী
ধুমকেতু এক্সপ্রেস ছাড়ে 6:00 Am রাজশাহী পৌঁছায় 11:40 Am ভাড়া 340
শনিবার বন্ধ
বনলতা এক্সপ্রেস ছাড়ে 1:15 pm রাজশাহী পৌঁছায় 6:00 pm ভাড়া 375 টাকা
সিল্কসিটি ছাড়ে 2:40 pm রাজশাহী পৌঁছায় 8:45pm ভাড়া 340 টাকা
রবিবার বন্ধ
পদ্মা এক্সপ্রেস ছাড়ে 11:20 pm রাজশাহী পৌঁছাই 4:40 Am ভাড়া 340 টাকা।
মঙ্গলবার বন্ধ
রাজশাহী থেকে ঢাকা
বনলতা এক্সপ্রেস ছাড়ে 7:00 Am ঢাকায় পৌছাইয়া 11:40 Am ভাড়া 375 টাকা
শুক্রবার বন্ধ
সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ছাড়ে 7:40 Am ঢাকায় পৌঁছে 2:00 pm ভাড়া 340 টাকা
রবিবার বন্ধ
পদ্মা এক্সপ্রেস রাজশাহী থেকে ছাড়ে 4:00 pm ঢাকায় পৌছাইয়া 9:38pm ভাড়া 340
মঙ্গলবার বন্ধ
ধুমকেতু এক্সপ্রেস রাজশাহী থেকে ছাড়ে 11:20 pm ঢাকায় পৌঁছায় 04:43 Am ভাড়া 340 টাকা।
শনিবার বন্ধ
কোথায় থাকবেন
রাজশাহী শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল আছে। রাজশাহী পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল
হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনাল-0721776188
হোটেল মুক্তা ইন্টারন্যাশনাল-0721771100
হোটেল ডালাস ইন্টারন্যাশনাল-0721811470
হক’স ইন-0721810420
[ হোটেল গুলোর ভাড়া 500 থেকে 4000 টাকার মধ্যে পড়বে]